সুলাইমান (আ:) ও তিমি মাছের অবাক করা ঘটনা :

 


সুলাইমান (আ:) ও তিমি মাছের অবাক করা ঘটনা :

      সুলাইমান (আ:) আল্লাহ কি বললেন, আল্লাহ গোটা  বিশ্বের সব প্রাণীকূলকে, পশুকূলকে,  মানবকূলকে, মৎসকুলকে, পাখি কুল কে, জিন কুলকে আমি একবেলা দুপুরের খাবার খাওয়াবো। আল্লাহ বলেন না, সুলাইমান এটা তোমার কাজ না। এটা আমার কাজ তুমি পারবা না। সুলাইমান (আ:) বললেন আমারে একটু চেষ্টা করতে দেন না। আমার মনে বড় শখ গোটা বিশ্বের বাদশা আমাকে বানায় দিলেন। আমি যদি সবার জন্য এক বেলা খাবার খাওয়াইতে পারতাম আমার কলিজার ঠান্ডা হয়ে যেত। পরে সুলাইমান (আ:) এর জড়াজড়ির কারণে, আল্লাহপাক বললেন ঠিক আছে দেখো চেষ্টা করে। 

      সাইয়েদেনা সুলাইমান (আ:) এর অনুসারী ছিল জ্বীনেরা, জ্বীনেরা উনার কথা শুনতো। সব জিনদেরকে নিয়ে বসালো, জিনদের সাথে গোল টেবিল বৈঠক। জ্বীনের বাদসারে বলল, জ্বীনের বাদশা আমি গোটা বিশ্বের সব প্রাণীকুলকে একদিনের দুপুরের খাবার খাওয়াবো। যাও সাগরের পারে চল্লিশ কিলোমিটার জায়গার মধ্যে খাবারের আয়োজন করো। জ্বীনের বাদশা বিশাল বিশাল ডেগ পাতিল নিয়ে সমস্ত জিনদের নিয়ে রান্না করার কাজ শুরু করল। আফ্রিকার জঙ্গল থেকে আস্ত গরু গুলো এনে ফ্রাই করতে শুরু করল, হরিণগুলোকে রোস্ট করতে লাগলো, সাগরের তিমি মাছ গুলো ভুনা করতে শুরু করল। আকাশের বড় বড় পাখি গুলোকে রোস্ট করতে লাগলো। ৪০ কিলোমিটার বেপি জায়গা নিয়ে খাবার তৈরি করা হচ্ছে। কারণ, সাইয়েদেনা সুলাইমান (আ:) গোটা বিশ্বের মানুষকে গোটা বিশ্বের প্রাণী গুলোকে একদিনের দুপুরের খাবার খাওয়াবে। ৪০ কিলোমিটার জায়গায় খাবারের আয়োজন করা হলো। সাইয়েদেনা সুলাইমান (আ:) বললো,রান্না করতে থাকো বিরানির স্তূপ, গরুর মাংসের স্তূপ, কুমড়ার স্তুপ, সব কিছুর স্তুপ করা হলো। ফলমূল মাছ মাংস এনে স্তুপ করা হলো ৪০ কিলোমিটার এরিয়া নিয়ে। সব যখন রান্না শেষ চলে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষন, সেই মাহেন্দ্রদিন যেদিন সে আহপায়ন করাবে।

     সাইয়েদেনা সুলাইমান (আ:) খাবার উদ্বোধনের দিনে উদ্বোধন করবেন। উনি উদ্বোধনী বাক্য বললেন, আমি বেশি কিছু বলবতে চাই নাহ। মাছরা লাইন ধরবে সাগরের এদিক দিয়ে, পাখিরা লাইন ধরবে ডান দিক দিয়ে, মানুষ লাইন ধরবে বাম দিক দিয়ে। জিনেরা লাইন ধরবে সামনের দিক দিয়ে, আর বোনের পশুরা লাইন ধরবে জঙ্গলের এই দিক দিয়ে। 

     লাইনে লাইনে আসো তোমাদেরকে খাবার দেওয়া হবে। সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত, যার যত মনে চায় পেটভর্তি খাবার দেয়া হবে। এমন সময় সাগরের ভিতর হতে এক বিশাল তিমি মাছ হা করে ডেকে বলল সুলাইমান। আমি লাইন মানি না। আমার পেটে প্রচন্ড ক্ষুধা। ক্ষুধার জ্বালায় আমি মরতে বসেছি, আমি লাইন মানি না আমাকে খাবার দাও। সাইয়েদেনা সুলেমান (আ:) বললেন, আমি নবী মানুষ আমি বেলাইন করতে পারি না। উনি বললেন আমি লাইন ছাড়া খাবার দিতে পারবো না। তিমি মাছ বলে আমি লাইন মানি না, আমার পেটের ভেতর এত ক্ষুধা ক্ষুধার জ্বালায় আমি মরতে বসেছি। তোমার এই মেহমানখানায় এসে যদি খাবারের অভাবে মারা যায় কিয়ামতের দিন। আল্লাহ তোমারে ছাড়বে নারে সুলাইমান। সুলাইমান (আ:) ভাবেন হায় হায় এ তো ঠিক বলছে, এই তিমি মাছ যদি খাবারের অভাবে মরে যায় তাহলে তো ব্যাড রেকর্ড হয়ে যাবে। 

      তখন সুলাইমান (আ:)বললেন, সবার জন্য লাইন এটার জন্য বেলাইন। উনি ঘোষণা দিলেন যাও ওইটারে খাবার দাও। তিমি মাছ বলল সোলাইমান আমি আমার বিশাল মুখটারে হা করে রেখেছি জ্বীনদেরকে বল খাবার ঢুকায় দিতে। যতক্ষণ না আমার পেট ভরবে আমি হা করে থাকবো। সুলাইমান (আ:) ভাবলেন বিশাল একটা আস্ত গরুর রোস্ট ঢুকায় দিলে তো শেষ। সুলাইমান (আ:) বললেন যাও আফ্রিকার যে গরুগুলোর রোস্ট করেছো সেই রোস্ট তার মুখের ভিতর ঢুকিয়ে দাও। জিনের  বাদশা যায় রোস্ট ঢুকায় দিল। ওইটা হা করেই আছে। আবার বলল একটা খাসির মেরে দাও, হাসি মেরে দেওয়া হল ওই ডাহা করে আছে। বিরিয়ানি মেরে দাও মেরে দেওয়া হল। বলল আরো দশটা গরু ঢুকায় দাও। হাঁ করেই আছে। আরো ৫০ টা খাসি ঢুকায় দাও হা করে আছে। আরো কয়েক হাজার তিমি মাছ ঢুকায় দাও হা করে আছে, খাবার যত আছে দিতে শুরু করলো এমন সময় এক কিলোমিটারের খাবার শেষ। তিমি মাছ বিশাল করে হাঁ করে আছে সাগরে।জ্বীনের বাদশা খাবার ঢুকাইতে লাগল, এক কিলোমিটার শেষ, পাঁচ কিলোমিটার শেষ, ১০ কিলোমিটার শেষ, ২০ কিলোমিটার শেষ, 30 কিলোমিটার শেষ, ৪০ কিলোমিটার শেষ। এখনো তিমি মাছের মুখ হাঁ করে আছে।

      সাইয়েদেনা সুলাইমান (আ:) সিজদায় পরেগেলো, আল্লাহরে ডেকে বললেন মাবুদ গো, আমি বুঝতে পারি নাই। আসলে রিজিক দেওয়ার মালিক আমরা না। গোটা বিশ্বের সবাইকে খাওয়ানোর ক্ষমতা আমার নাই। রিজিকের মালিক একজন তিনি হলেন আল্লাহ। (সুবহানাল্লাহ) 

Comments

  1. ধন্যবাদ আমার পেজটিতে আসার জন্য

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

What Allah created on the day of the week(আল্লাহ তায়ালা সপ্তাহের যেদিন যা সৃষ্টি করেছিলেন)

A few words about beparda,, (বেপর্দা নিয়ে কিছু কথা)