এক নাস্তিকের ঘটনা
এক নাস্তিকের ঘটনা :
ইরাকে এক নাস্তিকের জন্ম হয়েছিল। "মেজোষী নাস্তিক মূলহিদ" সে বলে বেড়াচ্ছিল, আমি স্রষ্টায় বিশ্বাস করিনা। কারণ, স্রষ্টা দেখা যায় না। ইরাকের লোকেরা বলল আমাদের একজন ইমাম আছে, নাম "নোমান ইবনে সাদিক" যাকে আমরা ইমাম আল আজম আবু হানিফা নামে চিনি। সবাই বলল তুমি যে স্রষ্টারে খুঁজে পাওনা আমাদের ইমাম স্রষ্টারে দেখিয়ে দিবে।(সুবহানাল্লাহ)
সে বলল ঠিক আছে তোমাদের ইমামরে আসতে বলো। কবে, সামনের জুম্মাবারের ঠিক ভরদুপুরে, দুপুর ২টার দিকে জুম্মার নামাজের পরে। আমিও আসবো তোমাদের ইমামও আসবে। ডিবেট হবে, দেখি আমি স্রষ্টার বিপক্ষে আপনাদের ইমাম স্রষ্টার পক্ষে। দেখি কে জিতে যায় ।
ডিবেট দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষ আসছে ইরাকে কুফা নগড়িতে হাজার হাজার মানুষ এসেছে ওই নাস্তিকও এসেছে। যে আল্লাহকে বিশ্বাস করে না, স্রষ্টাকে বিশ্বাস করে না । সবাই এসেছে, আসে নাই শুধু ইমাম আবু হানিফা। নাস্তিক বলে তোমাদের ইমাম ভয় পাইছি। উনি এসেছেন দুই ঘন্টা দেরি করে। দুই ঘন্টা দেরি করে যখন উনি আসলেন, নাস্তিক বলে আপনার সাথে কোন কথা নাই। আপনার তো সময়ের কোন জ্ঞান নেই। আপনার সাথে কিসের আলাপ।
ইমাম আবু হানিফা বলে, ইনদি ওযুর আমার ওযুর আছে। কি ওযুর উনি বললেন , আমি যখন ঘর থেকে বের হই, আমার বাড়ির সামনে বিশাল এক নদী পড়ে যায়। আর এই নদী পার হতে আমার নৌকা ব্যবহার করতে হয়। আজকে দেখি কোন নৌকা নাই, মাঝি ও নাই। কিচ্ছু নাই কিভাবে পার হব। হঠাৎ দেখি নদীর পাশে বিশাল বড় গাছ। গাছটা হঠাৎ এমনি এমনি দুই টুকরো হয়ে গেল, গাছ থেকে বিশাল তক্তা বের হয়ে গেল, তক্তাগুলো অটোমেটিক্যালি জোড়া লেগে নৌকায় পরিণত হলো। এই নৌকা মাঝি ছাড়া সোজা সা করে আমার সামনে চলে এলো। আমি নৌকার বিসমিল্লাহ বলে বসে পড়লাম। হঠাৎ নৌকা আমারে টান দিয়ে উপরে নিয়ে এলো। তারপর আমি আপনার এই ময়দানে ছুটে এসেছি। এই যে গাছ কাটা তক্তা হওয়া নৌকা হওয়া মাঝি ছাড়া নৌকা চলা এই প্রসেসিং হতে আমার দুই ঘন্টা সময় লেগেছে। আমি খুবই দুঃখিত যে সময় মত পৌঁছাতে পারিনি।
নাস্তিক বলে তোদের ইমাম গাজা খাইছে। তোদের ইমামের মাথার তার ছিড়ে গেছে। এরে নিয়ে যা। ইমাম আবু হানিফা বললেন এই ময়দানে আপনি আমারে বকা দিলেন কেন, পাগল বললেন কেন, তার চিড়া বলে ডাকলেন কেন, মাসনুন শব্দ ব্যবহার করলেন কেন, মার্জিত ভাসা ব্যবহার করতে শিখেননি।
নাস্তিক বলে এ কেমন কথা বললেন, আপনিতো শিক্ষিত মানুষ, দার্শনিক মানুষ, জ্ঞানী মানুষ, ইমাম মানুষ, কোন মানুষ ছাড়া বিশাল বড় বড় গাছ কাটা যায় নাকি। মিস্ত্রি ছাড়া তক্তা বানানো যায় নাকি। মিস্ত্রি ছাড়া নৌকা এমনি এমনি হয় নাকি। মাঝি ছাড়া পানিতে নৌকা চলে নাকি।
ইমাম আবু হানিফা বললেন এই তো লাইনে আসছেন আপনি। লাইনে আনার জন্যই তো এত গল্প। আপনার কথা থেকে যদি ধরি, করাত ছাড়া গাছ কাটা যায় না, এমনি এমনি তক্তা হয় না, এমনি এমনি নৌকা হয়না, মাঝি ছাড়া নৌকা এমনি এমনি চলে না। তাহলে আকাশ কেন এমনি এমনি হল। জমিন কেমন করে এমনি এমনি হল। দ্বিপ্রহরের জল জলে সূর্য টা কেমন করে হলো। কেমন করে নভোমন্ডল, ভূমন্ডল তৈরি হলো। কেমন করে দিনশেষে রাত্রে আসে, কেমন করে রাত্রি শেষে দিন আসে। ওইটা যদি এমনি এমনি না হয়। তাহলে এই মহান বসুন্ধরায় সবুজ শ্যামল কেমন করে হয়।
নাস্তিক বলে হায় হায় আসলেই তো আমি একজন বোকা। এই ভাবে তো ভেবে দেখি নাই। আসলেই তো এইগুলো এমনি এমনি হয় নাই। একজন মহা শক্তিধর, মহাপরিচালক এর মহাব্যবস্থাপকের ব্যবস্থাপক তিনি কে (আল্লাহ)। বিশাল এক ব্যবস্থাপক আছে। তিনি সব কন্ট্রোল করছেন। এতদিন পর্যন্ত আমি বুঝতে পারি নাই। আমারে মাফ করিয়ে দেন। আর পড়িয়ে দেন "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা:)"
সাইয়েদিনা আবু হানিফার হাতে হাত রেখে কালেমা শাহাদাত বাক্য পাঠ করেছেন। (সুবহানাল্লাহ)।
ধন্যবাদ আমার ওয়েব সাইটটি পরিদর্শন করার জন্য।
ReplyDelete